এফএনএস: এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি জেগে উঠেছে।’ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। এরশাদ বলেন, এবার জাতীয় পার্টির ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মনোনয়ন বিক্রি হয়েছে। এটা আমার পার্টির জন্য, আমাদের সকলের জন্য সুখবর। এইচ এম এরশাদ বলেন, সবাইকে পার্টির স্বার্থে কাজ করতে হবে। ত্যাগ স্বীকারের মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সবাইকে। জাতীয় পার্টি আবার জেগে উঠেছে। সাক্ষাৎকারের সময় নির্ধারিত ছিল। সকাল থেকে নেতা-কর্মীরা আসতে শুরু করলেও বেলা ১২টার দিকে আসেন পাটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। এরপর শুরু হয় অনুষ্ঠান। বেলা সোয়া ১২টার দিকে আসেন কো চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর। জাতীয় পার্টি যে দলকে সমর্থন দেয় সেই দলই ক্ষমতায় যায়। যাদের দিকে তাকায় না তারা অন্ধকারে রয়ে যায়। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের উদ্দেশে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আমাদের চেয়ারম্যান অনেক জেল-জুলুম, হামলা-মামলা মাথায় নিয়ে নানারকম প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে জাতীয় পার্টির পতাকা ধরে রেখেছেন। জাতীয় পার্টি একটি শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ পার্টি। আমরা যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। চেয়ারম্যান যেখানে যাকে মনোনয়ন দেবেন আমরা তার সঙ্গে কাজ করবো। সবাই চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন। মহাসচিবের বক্তব্যের পর পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় ৩০০ আসনে ৭৮০ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীর নাম পড়ে শোনান এবং মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, পার্টির জন্য আমি সাত বছর জেল খেটেছি। আমি জেলের মধ্যে অসুস্থ হয়েছিলাম। খালেদা জিয়া আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি। উল্টো বলেছিলোন, এরশাদকে মরতে দাও। এরশাদ মরে নাই। একটি দিনও আমি সুখী ছিলাম না। এখনো আমার নামে মামলা আছে। আমার মত দুঃখি কেউ নেই। পার্টির জন্য আমার চেয়ে কষ্ট কেউ করেনি। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা সবাই নিজ এলাকায় ফিরে যান। সময়মতো আমি সিদ্ধান্ত জানাবো। আমি যাকে যেখানে মনোনয়ন দেবো, তার জন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। প্রাথমিকভাবে আমরা ৩০০ আসনে মনোনয়ন দেবো। রাজনৈতিক মেরুকরণের কারণে কোনো দলের সঙ্গে জোট করতে হলে অনেক আসনে ছাড় দিতে হবে। সেই সিদ্ধান্ত আমি নেবো। যা করবো পার্টির স্বার্থেই করবো। সমাপনী বক্তব্যে পার্টির চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেন, আজ আমাদের আনন্দের দিন। তরুণ প্রজন্ম যেভাবে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আছে তাতে ভবিষ্যতে আমাদের পার্টি আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এ সময় দশম জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘তরুণরাই পার্টিকে এগিয়ে নেবে।’ এদিকে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। এ সময় রওশন এরশাদ উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ‘নতুন বাংলাদেশ গড়বো’ শিরোনামে একটি গানও গান।