এফএনএস: পহেলা মার্চ থেকে ঢাবির হল খুলে দিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জোনায়েদ। শিক্ষার্থীরা ফেব্র“য়ারির মধ্যেই হল খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান। আন্দোলনকারীদের একজন তানভীর আলম চৌধুরী বলেন, প্রায় একবছর হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হল বন্ধ। টিকাও চলে এসেছে। এখন হল খুলতে এত বিলম্ব করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। আমরা সরকারের প্রতি আহŸান জানাবো তাদের সিদ্ধান্ত। এদিকে গতকাল সোমবার জোরপূর্বক হলে প্রবেশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্ হল এবং অমর একুশে হলের ভেতরে অবস্থান নেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শহীদুলাহ্ হলের মূল ভবনের ফলকে তালা ছাড়া আটকানো শিকল খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। এ সময় প্রশাসন কর্তৃক কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি শিক্ষার্থীদের। হলে উঠে উলাস প্রকাশ করতে দেখা যায় আবাসিক শিক্ষার্থীদের। তারা রুমের ভেতরে রুমমেটদের সঙ্গে সেলফি নিচ্ছিলেন। ব্যাট-বল নিয়ে মাঠেও খেলছিলেন। শহীদুলাহ্ হলের শিক্ষার্থীরা জানান, হলে উঠতে আমাদের তেমন কোনো বেগ পেতে হয়নি। হল গেইটের তালা আগেই খোলা ছিল। আমরা শুধু বড় গেইটের তালা ছাড়া আটকানো শিকল খুলে ভেতরে প্রবেশ করি। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, প্রায় এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। আমরা বাড়িতে থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে গেছি। তাই জোর করে হলে উঠে গেছি। এখন হলেই অবস্থান করবো। শহীদুলাহ্ হলের নিরাপত্তা কর্মী কামাল হোসেন বলেন, প্রথমে একজন শিক্ষার্থী হলের ভেতর থেকে মালামাল নেবে বলে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে ৪০-৫০ জন জড়ো হয়ে হলে ঢোকার জন্য জোর করলে আমি তালা খুলে দেই। অমর একুশে হলের শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা হলের ভেতরে হল খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন করছিলাম। মানববন্ধন শেষ করে রুমে উঠে যাই। এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনো বাধা পেতে হয়নি। এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুলাহ্ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা দেখছি কী করা যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমরা এ বিষয়ে অবগত। ইতোমধ্যে হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করার জন্য সহকারী প্রক্টররা হলের দিকে যাচ্ছেন। অন্যদিকে প্রশাসনের হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) তালা ভেঙে আবাসিক হলে অবস্থান নেয়া শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হলগুলোতে প্রাধ্যক্ষরা শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে হল ত্যাগের কথা বলছেন। তবে এ নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে এখনও হলে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে স্থানীয়রা। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ ঘটনায় ৪০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন শনিবার দুপুরে হলের তালা ভেঙে ভেতরে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেই থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে হলেই অবস্থান করছেন জাবি শিক্ষার্থীরা। এদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও হল খোলার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।